পরিবেশ সংরক্ষণের ১০টি উপায়

পরিবেশ সংরক্ষণের ১০টি উপায়।

পরিবেশ সংরক্ষণের ১০ টি উপায় সম্পর্কে আমরা এখন বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আপনারা পরিবেশ সংরক্ষণে দশটি উপায় জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মোনযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।

মানব জাতি থেকে বা পশু প্রাণী সকলকে বেঁচে থাকতে হলে পরিবেশ সংরক্ষণ করা আমাদের অবশ্যই করণীয় ।কারণ পরিবেশ যদি না থাকে তাহলে সেখানে কোনভাবেই কোন প্রাণী বসবাস করতে পারবে না ।অথবা যদিও করে থাকে তাহলে সে বেশি দিন স্থায়ী হতে পারবেনা।

সেজন্য আমাদের সকলেরই পরিবেশ সংরক্ষণ করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পরিবেশ সংরক্ষণ না করলে এটি মানবজাতির বা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে।

আরো পড়ুন = Male মানে কি ছেলে না মেয়ে

তাই আমাদের এই পরিবেশ সংরক্ষণ করা একটি দায়িত্ব। চলুন তাহলে কিভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ করবেন তা বিস্তারিতভাবে জেনে নি।

পরিবেশ সংরক্ষণে ১০ টি উপায়।

১।গাছ লাগানো।

পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য গাছ লাগানো অতি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। কারণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে এই গাছ। যদি গাছ আমাদের প্রচুর পরিমাণে থাকে তাহলে সেখানে পরিবেশ সহজে নষ্ট হয় না ।এবং আমাদের বায়ুপ্রবাহের মধ্যে যেসব খারাপ গ্যাস অনুভূত হয়ে থাকে সেগুলোকে রোধ করতে পারে এই গাছ। তাই আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগানো উচিত পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে।

২।কল কারখানার বর্জ্য পরীশোধন।

পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কল কারখানা বর্জ্য অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলে। যদি কারখানা বর্জ্য গুলো পরিশোধন করে ছাড়া হয়। তাহলে সে ক্ষেত্রে আমরা পরিবেশ রক্ষা করতে পারি। কারণ পরিবেশ ের ভারসাম্য নষ্ট করে এই কলকারখানা ধোয়া বা বর্জ্য। এবং এ কল কারখানা যেসব পানি বর্জ্য রয়েছে সেগুলো নদীতে মিশে নদী দূষণ হয়ে থাকে। তাই আমাদের কল কারখানা বর্জ্য গুলো পরিশোধন করতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।

৩।প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো।

আমরা চাইলে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে পারি। এ প্লাস্টিকের বদলে আমরা যেসব পচন সিল জিনিস দিয়ে ব্যাগ তৈরি করা যায়। সেগুলো তৈরি করতে পারি যেমন পার্ট দিয়েও ব্যাগ তৈরি করা যায়। যদি আমরা এইসব ব্যাগগুলো ইউজ করি বা ব্যবহার করে থাকি তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।

৪।বায়ু দূষণ কমানো।

যদি আমরা বায়ু দূষণ কমাতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের যেসব ধোঁয়া রয়েছে সেগুলো আগে বন্ধ করতে হবে। যেমন ভাটার দোয়া কলকারখানা ধোয়া ইত্যাদি এ ধোয়া গুলো বায়ুতে মিশে বায়ু দূষণ করে ফেলে। যদি আমরা এগুলো সর্বনিম্ন মানে নিয়ে আসতে পারি তাহলে অবশ্যই বায়ু দূষণ কমানো সম্ভব।

৫।প্রাকৃতিকভাবে চাষাবাদ।

যদি আমরা কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে পারি তাহলে আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কীটনাশকের বদলাতে আমরা জৈব সার ব্যবহার করতে পারি। যদি আমরা এই জৈব সার ব্যবহার করি তাহলে মাটি উর্বর থাকবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করবে না।

৬।সামাজিক সচেতন।

যদি আমরা নিজে সচেতন হয় বা সকলকেই সচেতন হতে বলি। তাহলে তাহলে এতে করে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারব।

৭।পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করা।

যেসব পণ্য পরিবেশবান্ধব সেসব গুলো ব্যবহার করতে হবে। যেগুলো পরিবান্ধব নয় সেগুলো ব্যবহার করা যাবে না। যেমন প্লাস্টিকের বোতল অথবা প্লাথিন এগুলোর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।

৮।বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ।

যেসব কল কারখানা রয়েছে এবং সেই কলকারখানা বর্জ্য রয়েছে। সেগুলো পরী শোধনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯।ইলেকট্রিক ডিভাইস।

আমাদেরকে ইলেকট্রিক ডিভাইসের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। যত কম ব্যবহার করা যায়।

১০।জ্বালানির ব্যবহার কমানো।

আমাদেরকে জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে এবং হাটা চলার চেষ্টা করতে হবে। যানবাহনে কম যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে করে শরীর সুস্থ থাকবে এবং যানবাহন থেকে যেসব ধোয়া নির্গত হয় সেগুলো আর হবে না।

পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা।

  • আমরা এখন পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানব। আমাদের পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানা অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানবজাতির জন্য পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন সেগুলো জানি।

আরো পড়ুন = বায়ু দূষণের ১০টি কারণ – বায়ু দূষণ রোধের ১০টি উপায়

  • স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়ে থাকে। কারণ যদি পরিবেশ ভালো না থাকে তাহলে মানুষের হুমকির মুখে পড়বে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।
  • জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলা করা এবার বায়ুমণ্ডলের মধ্যে একটি প্রধান সমস্যা রয়েছে। সেটি হলো গ্রীন হাউজ গ্যাস। এর মাত্রা যদি কমিয়ে আনতে পারা যায় তাহলে আমাদের বৈশিক উষ্ণায়নের প্রভাব কমানো সম্ভব এবং এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মোকাবিলা করতে পারে। যেমন বন্যা খরা অথবা ঝড়ের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
  • পৃথিবীতে যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে সেগুলোর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। নয়তো এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
  • অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা আমাদের প্রয়োজন। কৃষি পর্যটন বা মৎস্য কে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহার না করে সেখানে প্রাকৃতিকভাবে চাষাবাদ করলে জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি পায়। এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়া যায়।
  • পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য।
  • যেসব পানি জলে থাকে সেভাবে যে রক্ষা করার জন্য
  • পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য।
  • উচ্চ বায়ুমণ্ডল সুরক্ষার জন্য।
  • বায়ু দূষণ কমিয়ে আনার জন্য।
  • পানি দূষণ কমিয়ে আনার জন্য।

পরিবেশ রক্ষায় মানুষের ভূমিকা।

এখন আমরা আলোচনা করে পরিবেশ রক্ষায় মানুষের কি কি ভূমিকা রয়েছে সেসব বিস্তারিত তুলে ধরবো ।জানতে হলে অবশ্যই আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

পরিবেশ রক্ষায় মানুষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যদি সে সব ভূমিকা গুলো পালন করে তাহলে অবশ্যই যথাযথ ভাবে তারা পরিবেশ রক্ষা করতে পারবে। যেমন কোন জিনিস দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা বা পুনরায় ব্যবহার করা এবং পানি দূষণ না করা চাইলেই মানুষ পানি দূষণ রোধ করতে পারে।

অতি গাছপালা লাগানো এবং পানি সংরক্ষণ করা অর্থাৎ প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ করা। এমনকি ফুটানো পানি বা বৃষ্টির পানি সেগুলোকে সংরক্ষণ করা। এবং পরিবেশবান্ধব যেসব প্রযুক্তি রয়েছে সেসব ব্যবহার করা। এবং কৃষি কাজে জৈব সার ব্যবহার করা।

এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এবং বন্যপ্রাণীকে সংরক্ষণ করা। এবং যেখানে সেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহার না করা। এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনা। এবং নদীতে বা জলাশয় প্লাস্টিক বা কোন আবর্জনা না ফেলা ।এসবের মধ্যেই মানুষের পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা।

পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা অত্যন্ত জরুরী। কারণ গাছপালা যদি না থাকে তাহলে পরিবেশ কোনোভাবেই থাকবে না। এমন কি আমরা থাকবো না। যত গাছ পালাবা বন জঙ্গল বেশি হবে তত পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে যেমন।

জলবায়ু স্বাভাবিক মাত্রায় থাকবে। মাটির ক্ষয় রোধ হবেনা ।এবং জল সংরক্ষণ থাকবে। এবং সিতলতা বৃদ্ধি করবে এবং শব্দ দূষণ কমাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করবে। এবং বিভিন্ন বৈষিক উষ্ণায়ন বা জলবায়ুর পরিবর্তন কমিয়ে আনবে।

পরিবেশ সংরক্ষণ কাকে বলে?

পরিবেশ সংরক্ষণ কাকে বলে তা আমাদের জানতে হলে এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়তে হবে। নয়তো পরিবেশ সংরক্ষণ কাকে বলে সে সম্পর্কে জানা যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ হলো বায়ু পানি মাটি এবং বনাঞ্চল পানি গাছপালা কে রক্ষা করা দূষণের হাত থেকে বাঁচানো কে পরিবেশ সংরক্ষণ বলে।

এ পরিবেশ সংরক্ষণের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এবং বিভিন্ন দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ।এবং বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যেমন বন্যা খারা এবং ঝড় ইত্যাদি এসব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ করে থাকে।

পরিবেশ রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপ।

প্রত্যেকটি দেশেরই সরকারের দায়িত্ব হল পরিবেশ রক্ষা করা। কারণ পরিবেশ রক্ষা না করতে পারলে আমাদের এই মানব জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তাই পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত সেগুলো আমরা এখন তুলে ধরব।

  • গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে জাতীয় আন্তর্জাতিক সহায়তা করা।
  • বিভিন্ন ফাকা স্থানের গাছ লাগানোর জন্য সরকারি কার্যক্রম চালু করা।
  • জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
  • প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবেশবান্ধব ব্যবহার করা।
  • পরিবেশ রক্ষায় একটি নিবন্ধন আইন পাস করা।
  • দেশের অপচয় রোধ করা।
  • গবেষণাগারকে সমৃদ্ধ করা এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা।

যদি কোন দেশের সরকার এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করে থাকে তাহলে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রদের ভূমিকা।

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।একজন ছাত্র চাইলে সবকিছুই করতে পারে। যেমন পরিবেশ রক্ষা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে পারে এই ছাত্ররা। তাই ছাত্রদের পরিবেশ রক্ষায় যেসব ভূমিকা রয়েছে তা এখন তুলে ধরব।

গাছ লাগানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তারা দিবস অনুযায়ী একসঙ্গে অনেকগুলো হয়ে তারা গাছ লাগাতে পারে।

যেকোনো জিনিস পুনরায় ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে।

বর্জ্য স্থাপনা তৈরি করতে হবে যেখানে।

সরকারি বেসরকারি উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে হবে।

পরিবেশবান্ধব জীবন যাপন করতে হবে।

এবং এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে সহযোগিতা করতে হবে, পরিবেশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেসব ক্ষেত্রে।

পরিবেশ সংরক্ষণ কত প্রকার ও কি কি?

পরিবেশ সংরক্ষণের প্রকার মাত্র ২টি যেমন ভৌত সংরক্ষণ ও জীব সংক্রান্ত সংরক্ষণ।

১।ভৌত সংরক্ষণ হলো পানির খনিজ সোনা রুপা পেট্রোল কয়লা সিসা গ্যাস ইত্যাদি সংরক্ষণ করাকে ভৌত সংরক্ষণ বলে।

২।জীব সংক্রান্ত সংরক্ষণ বিভিন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ করা কেই বলা হয়ে থাকে যে জীব সংক্রান্ত সংরক্ষণ।

উপসংহার।

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা পরিবেশ সংরক্ষণে ১০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আর একটি বিষয় হল মানব জীবনের জন্য পরিবেশ রক্ষা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ।

যদি আরো পরিবেশ রক্ষা না করতে পারি তাহলে মানবজাতি একসময় হুমকির মুখে পড়বে এবং আমাদের আগামী প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই অবশ্যই আমাদের সকলকেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। এবং আমরা উপরে যে কয়টি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে করণীয় রয়েছে সেসবগুলো আলোচনা করেছি।

যদি আপনি সেগুলো যথাযথভাবে মেনে চলেন বা কাজে লাগাতে পারেন তাহলে অবশ্যই আমরা ধন্য হব এবং পরিবেশ রক্ষা পাবে। এবং আগামী প্রজন্ম একটি সুন্দর জীবন পাবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment